শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১
অনলাইন ডেস্ক।।
বগুড়ার আদমদীঘিতে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছিলেন মাফিয়া খাতুন ও জালাল উদ্দিন নামের কথিত দম্পতি। বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) দিনগত রাতে অবৈধ গর্ভপাত করাতে গিয়ে অধিক রক্তক্ষরণে মারা যান মাফিয়া খাতুন। শুক্রবার (২৫ মার্চ) সকালে উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরের পান্নার মোড়ের ভাড়া বাসা থেকে কথিত স্বামী জালাল উদ্দিনকে আটক করেছে পুলিশ।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাসার মালিক ফেরদৌস মাহমুদ ও তার আরেক ভাড়াটিয়াকে আটক করে থানায় নেয় পুলিশ। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছিল।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁর আত্রাইয়ের গন্ড গোহালি গ্রামের মৃত কমেল আলী মণ্ডলের মেয়ে মাফিয়া খাতুন (৩৬)। চার বছর আগে স্বামীর সঙ্গে তার বিচ্ছদ ঘটে। সে ঘরে তার দুটি সন্তানও রয়েছে। স্বামী পরিত্যক্তা ওই নারীর সঙ্গে প্রায় দুই বছর আগে পরিচয় ঘটে নওগাঁর রানীনগর উপজেলার সিম্বা গ্রামের জালাল উদ্দিনের। জালাল তাকে বিদেশ পাঠানোর কথা বলে তার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। একপর্যায়ে মাফিয়ার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলেন।
সূত্র আরও জানায়, দেড় বছর আগে স্বামী-স্ত্রী পরিচয় দিয়ে তারা উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরের পান্নার মোড় এলাকায় ফেরদৌস মাহমুদের বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন। সপ্তাহে দু-তিনদিন সেখানে তাদের দেখা যেতো। এক পর্যায়ে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন মাফিয়া খাতুন। অন্যান্য দিনের মতো বৃহস্পতিবার দিনগত রাতে ওই বাসায় আসেন জালাল ও মাফিয়া। কিন্তু রহস্যজনকভাবে গভীর রাতে জালাল বাসা থেকে বেরিয়ে যান। আর রাতেই অবৈধ গর্ভপাত (৬ মাস বয়সের বাচ্চা) করাতে গিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যান মাফিয়া।
শুক্রবার সকাল ৯টায় বাসার লোকজন মাফিয়াকে ডাকতে গিয়ে ঘটনাটি জানতে পেরে কথিত স্বামী জালালকে ফোন করে বাসায় ডেকে আনেন। জালাল বাসায় এলে পুলিশ তাকে আটক করে।
জালালের দাবি, তিনি একজন আদম ব্যবসায়ী। বিদেশে লোক পাঠানোই তার কাজ। ওই নারীকে সৌদি আরব পাঠানোর জন্য তিনি চেষ্টা করছিলেন। এজন্য মাঝে মধ্যে তার সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। এর বেশি কোনো সম্পর্ক নেই।
বাসার মালিক ফেরদৌস মাহমুদ জানান, তারা স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে দেড় বছর ধরে বসবাস করছেন। তাদের কাছে বেশ কিছুদিন ধরে ভোটার আইডি কার্ড চাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু ‘আজ দেবো’, ‘কাল দেবো’ বলে সময়ক্ষেপণ করছিলেন।
সান্তাহার পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক আরিফুল ইসলাম বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া মর্গে পাঠানো হয়েছে। কথিত স্বামী জালাল, বাসার মালিক ফেরদৌস ও আরেক ভাড়াটিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।